ছবি: অন্তর্জাল
শীত প্রায় ‘যাই যাই’ করছে, শহরেও শুরু হয়েছে বসন্তের সমাগম। এই সময়ে শুধু শীতকে বিদায় জানানো হচ্ছে এমন নয়, একইসঙ্গে আমরা বিরতি দিচ্ছি শীত-পোশাককেও। যদিও ভোরের দিকে হিমেল বাতাসের ছোঁয়ায় আমাদের মনে শীতের আমেজ এখনও রয়েছে, তাই বলে ভারী জ্যাকেট বা সোয়াটেরর দিন আর নেই। বরং, সেগুলো যত্ন করে আবার তুলে রাখার সময় আসছে।
অনেকেই অভিযোগ করেন যে, একটি সোয়েটার খুব বেশি দিন পরতে পারেন না তারা। একবার শীতে পরার পরেই তা যেন পুরনো হতে শুরু করে। রোঁয়া ওঠে। রঙও যেন মলিন হতে থাকে। সোয়েটারকে যাবতীয় দোষ দিলেও নিজের যা যা দায়িত্ব পালন করার কথা, সেদিকে কি খেয়াল রাখেন আপনি? একটি সোয়েটার বা উলের যে কোনো পোশাক ভালো থাকে আপনার হাতের যত্নের উপর। ঠিক কীভাবে যত্ন নিলে উলের পোশাক বছরের পর বছর নতুনের মতো রাখা যায়, জানেন?
সামান্য দাগ লাগলেও কী পুরো সোয়েটারটি কাচা প্রয়োজন: শীত প্রায় যাওয়ার পথেই। কয়েকদিন শহরে খুব ঠান্ডা পড়েছিল এই কথা ঠিক। তখন যেসব সোয়েটার, জ্যাকেট বা কোট বের করে পরেছিলেন, তা নিশ্চয়ই এখন আর পরার প্রয়োজন হচ্ছে না!
এবার সেগুলো যত্ন করে তুলে রাখতে হবে: কিন্তু কীভাবে রাখবেন? সোয়েটারে কী কখনো দাগ-ছোপ লেগেছিল? তাহলে তা পরিষ্কার করে নেয়া প্রয়োজন। সেই জন্য কী করতে হবে? সোয়েটারের যেখানে দাগ লেগেছে সেটা পরিষ্কার করার জন্যে কি পুরো সোয়েটারটি কাচা প্রয়োজন?
স্পট ক্লিনিংয়ের ব্যবস্থা করুন: সোয়েটার বারবার কাচলে উল ঢিলে হতে থাকে। তাই যত কম কাচতে পারেন, ততই ভালো। রোজকার পরার সোয়েটার বা জ্যাকেট আপনি বাড়িতে কেচে নিতেই পারেন। কিন্তু ভালো সোয়েটার বা লং কোট বাড়িতে কাচার চেষ্টা করবেন না। দোকানে দিয়ে ড্রাই ক্লিনিং করিয়ে নেয়াই ভালো।
সোয়েটার পরার সময়ে যদি কোনো দাগ লেগে যায়, সেটি স্পট ক্লিনিং করার ব্যবস্থা করুন। এই বিষয়টি কীরকম? এর জন্য গোটা পোশাকটি নিয়ে জলে ভিজিয়ে দিতে হয় না। বরং, যে জায়গায় দাগ লেগেছে তার উপর মাইল্ড ডিটারজেন্ট দিয়ে সামান্য ঘষে নিন। এতে দাগ উঠে যাবে। কোনো সমস্যা হবে না। জায়গাটিও পরিষ্কার হবে আবার পুরো সোয়েটারটি কাচার দরকার হবে না।
এই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে: একান্তই কাচতে হলে কেমন নিয়ম মেনে চলতে হবে? কড়া ডিটারজেন্ট দিয়ে কোনো উলের পোশাক কাচবেন না। এতে তার বারোটা বাজতে খুব বেশি সময় লাগবে না। ফ্যাব্রিক যেমন ঢিলে হয়ে যাবে, পাশাপাশি সোয়েটারের মানও খারাপ হবে।
একটি বালতিতে ঠান্ডা পানি নিন। তাতে শ্যাম্পু বা মাইল্ড লিকুইড ডিটারজেন্ট মিশিয়ে দিন পরিমাণ মতো। এবার ঐ সোয়েটারটি মিনিট ১৫-২০ ভিজিয়ে রাখুন। সোয়েটার কাচার জন্যে আলাদা বিশেষ ডিটারজেন্ট পাওয়া যায়, সেটিও ব্যবহার করতে পারেন। এবার হাতের সামান্য চাপে সোয়েটারটি কেচে নিন। খুব জোরে চিপবেন না। সোয়েটার ভিজে অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখবেন না। ক্লিপ দিয়ে হালকা রোদে মেলে দিন। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
সোয়েটারের রং চটবে না, যদি এই কাজটি করেন: সোয়েটার কাচার কোনও পরিকল্পনা না থাকলে তা রোদে দিয়ে তুলে নিন। তবে সরাসরি চড়া রোদে দেবেন না। এতে আপনার উলের পোশাকের ক্ষতি হবে বেশি। কড়া রোদে রং মলিন হতে পারে। জেল্লা চলে যেতে পারে। তাই রোদের তাপ আসে, এমন জায়গায় ছায়ায় মেলে রাখুন। কয়েক ঘণ্টা রেখে তুলে ফেলুন।
আলমারিতে কীভাবে রাখবেন: লং কোট, জ্যাকেট বা সোয়েটার আলমারিতে ভাঁজ করে রাখতে পারেন। ঝুলিয়ে রাখলে উলে টান পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই এই সোয়েটারের কোনও ক্ষতি না হলেও পরে কিন্তু হতে পারে। টান পড়লে সোয়েটারের ফ্যাব্রিক নষ্ট হয়। তাই আলাদা আলাদা পোশাকের ব্যাগে দামি সোয়েটারগুলো ভাঁজ করে রাখুন। আলমারির একটি তাকে এই উলের পোশাক রাখুন। লং কোট আপনি হ্যাঙারে রাখতে পারেন। মাঝে মাঝে বের করে ছায়ায় মেলে দিন। আবার ভাঁজ করে তুলে রাখুন।
সঠিক যত্ন নিয়ে উলের পোশাক রাখতে পারলে ১০-১৫ বছরও তা ঠিক ভাবে রাখা যায়।
সূত্র: এই সময়, ডেইলি-বাংলাদেশ